ইসলাম ধর্ম অবমাননা এবং তদসংক্রান্ত আইন ও বিধিমালাকে নিয়ে নোংরা প্রোপাগান্ডা চালানোর দায়ে এথিস্ট এরা ম্যাগাজিনের বিরূদ্ধে মামলা
“এথিস্ট এরা” নামক ম্যাগাজিনের দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যাকে কেন্দ্র করে ম্যাগাজিনের সম্পদিকা আনিকা হক মল্লিক ও সহ-সম্পাদক জাওয়াদ হোসাইন সহ ম্যাগাজিনটির আরো ২৬ জন লেখক/লেখিকার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়েছে। গত ২৮-ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলার বাদী মোঃ হৃদয় কাজীর ২৭শে সেপ্টেম্বর জারি করা অভিযোগনামা আমলে নেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামান। মামলাটি (সি.আর – ৩৭০/২০২১) তদন্তের জন্যে পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপারের বরাবরে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেবার তারিখ ছিল পহেলা নভেম্বর যা পরবর্তীতে বর্ধিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগনামা পর্যবেক্ষণে আদালত সূত্র জানাচ্ছে যে উক্ত ম্যাগাজিনে শুধু ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর নোংরা লেখা-ই নয়, একই সাথে বাংলাদেশের আইনব্যবস্থায় ইসলাম ধর্মের যে উপাদানগুলো বিদ্যমান, সেগুলোকেও অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে এবং এর জের ধরে বাংলাদেশ সরকার, বিচার-ব্যবস্থা ও আইন ব্যবস্থা নিয়ে কুৎসা রটানো হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়েও চরম অপমানজনক লেখা ছাঁপা হয়েছে। সমকামী/উভকামীদের স্বীকৃতি, এই সংক্রান্ত আইনবদল বা আইন-বিলুপ্তি এবং ইসলামী মৌলবাদ সংক্রান্ত বিষয় এই ম্যাগাজিনের বিভিন্ন লেখায় উঠে এসেছে।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন- কমল চন্দ্র দাস, আরিফুল হক আরিফ, মোঃ জাকির হোসাইন, উম্মা কুলসুম নারগিস বানু, এমডি জহিরুল ইসলাম, আবু সাঈদ, জনি জোসেফ কস্তা, এম ডি উমায়েদ হোসাইন, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, এমডি সাইফুজ্জামান, শামীম আল মামুন, এমডি মারাজ মিয়া, জারিন সুলতানা সানরামনি, কমল চন্দ্র দাস, মোঃ আব্দুল রাজ্জাক, রোমানা আক্তার রুমকি, ইমরুল কায়েস, এমডি শাইম, মোঃ রইসুল ইসলাম, আল মাহফুজ, এমডি ওয়াহিদ হুসাইন, সুবর্ণা রহমান, শিপলু কুমার বর্মণ, ফারজানা ইসলাম সহ প্রমুখ।
এই ব্যাপারে মামলার বাদী মোঃ হৃদয় কাজীর সাথে কথা বলা হলে তিনি তাঁর আক্রোশ প্রকাশ করেন মামলার বিবাদীদের বিপক্ষে। তিনি বলেন, “এই ম্যাগাজিন দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন সহ অফলাইনে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে ও বাংলাদেশের যে আইনসমূহ ইসলামী চেতনা ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয় সে-সমস্ত আইন ও বাংলাদেশ সরকারের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র ও কুৎসা রটিয়ে আসছিলো।আমরা দেশের আইন মেনে মামলায় এসেছি। এরা শুধু যে ইসলামের বিপক্ষে বলে ক্ষান্ত হচ্ছে তা কিন্তু না, এরা একই সাথে বাংলাদেশ সরকার ও আমাদের প্রাণপ্রিয় আওয়ামী সরকারের আইন ও সংবিধান নিয়ে আক্রমণ করছে বিশেষ করে নাস্তিক ও সমকামীদের বিরূদ্ধে বাংলাদেশে যে প্রচলিত সুন্দর আইন-ব্যবস্থা আছে সেটাকে নষ্ট করবার পায়তাঁরা এই কাফিরদের। আওয়ামী সরকারের একজন সমর্থক ও কর্মী হিসেবেই বলছি যে এদের বিরূদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা না নিলে খুব বিপদে পড়ে যাবেন আমাদের নেত্রী ভবিষ্যতে।”
সরকারী নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় এই ধরণের বিষয়ে সরকার বেশ মনযোগী হয়েছে সম্প্রতি এবং এধরণের মামলায় সাজা হওয়া আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে দন্ডবিধি আইনের পরিবর্তনের ব্যাপারে চিন্তা করছে সরকারী উচ্চ মহল।
আসামী পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়্যেছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের প্রাথমিক তারিখ ছিলো পহেলা নভেম্বর কিন্তু পিবিআই এর অনুরোধক্রমে সে সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ ডিসেম্বরে প্রতিবেদন প্রাপ্তির জন্যে।