‘এথিস্ট এরা’ ম্যাগাজিনের বিরূদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়া হলো আবার
নিজস্ব প্রতিবেদক
এথিস্ট এরা ম্যাগাজিন আরো একটি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ম্যাগাজিনের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যাকে কেন্দ্র করে সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখে মোঃ সিরাজ নামে একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক বাদী হয়ে এই মামলা করেন লক্ষীপুরের আদালতে ডিজিট্যাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর অধীনে। মামলাটি নম্বর – সি.আর. – ৪৭৮/২০২১। মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২১, ২৫, ২৯, ৩১, ও ৩৫ ধারাক্রমে জারিকৃত। পাঠকেরা জেনে থাকবেন ঢাকার জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও একই বিষয়ের জের ধরে মামলা হয় ফৌজদারী আইনের অধীনে যে মামলা বর্তমানে ঢাকা পিবিআই-এ তদন্তাধীন (মামলা নং – সি.আর. – ৩৭০/২০২১, ঢাকা জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত)।
বাদী সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক কর্মী এবং আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসলামের অপমান বরদাশত করবে না সে নীতি মেনেই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কমলনগর থানার আওতাভুক্ত লক্ষীপুর চীফ জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট (ক্ষমতা-প্রাপ্ত) মোঃ বেলায়েত হোসেন মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা গ্রহণ করেন। এধরণের মামলা সাধারণতঃ তৎপরবর্তীকালে বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুন্যালে প্রেরণ করা হয়ে থাকে।
আমাদের পত্রিকার পক্ষ থেকে এথিস্ট এরার সম্পাদিকা আনিকা হক মল্লিক-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও আমাদেরকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরো বলেন ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও মানের ভাব প্রকাশ করতে পারছি না। প্রশাসন ও আমাদের কোনো সাহায্য করছে না, তারা বরং যেকোনোভাবে হয়রানি-হেনস্থাতে আগ্রহী। এই ম্যাগাজিনে আমরা যতজন লেখক বা ব্লগার রয়েছি সবাই কিন্তু দেশের বাইরে নেই, আমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করি না, আমার ভয় হচ্ছে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে যাদের নাম বিভিন্ন ইসলামিক গ্রুপে প্রকাশ করা হচ্ছে।”
ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা কী বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে সমীচিন কি-না এপ্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে অবশ্য পারেননি সম্পাদিকা।
এথিস্ট এরার সম্পাদিকা এবং সহ-সম্পাদক ছাঁড়াও মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন – এমডি তোফায়েল হোসাইন (প্রকাশক), আবু হানিফ (শিল্প নির্দেশক), এমডি রফিকুল ইসলাম (সার্বিক তত্বাবধায়ক), আরিফুল হক আরিফ, মোঃ জাকির হোসাইন, মুহাইমিনুল বিশ্বাস পারভেজ, জোবায়ের হোসেন, উম্মা কুলসুম নারগিস বানু, এমডি জহিরুল ইসলাম, আবু সাঈদ, জনি জোসেফ ডি কস্তা, এম ডি উমায়েদ হোসাইন, এমডি জিল্লুর রহমান, এমডি সাইফুজ্জামান, সামিউজ্জামান সিদ্দিক, এমডি মারাজ মিয়া, জারিন সুলতানা সানরামনি, কমল চন্দ্র সরকার, মোঃ আব্দুল রাজ্জাক, ইমরুল কায়েস, রুমানা আফরোজ রাখি, এমডি শাইম, আল মাহফুজ, রোমানা আক্তার রুমকি, এমডি ওয়াহিদ হুসাইন, সুবর্ণা রহমান, শিপলু কুমার বর্মণ, ফারজানা ইসলাম, অনুপমা হাসান, নুরুল হুদা, তানভীর আহমেদ, মোঃ আশিফ হোসাইন, বিপ্লব পাল সহ অনেকে।
মামলার বাদী মোঃ সিরাজের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। প্রশাসনের তরফ থেকে এ-ব্যাপারে কোন বিবৃতি দেওয়া হয়নি। মামলাটি বর্তমানে লক্ষীপুরের কমলনগর থানার ওসির অধীনে তদন্তাধীন। মামলার প্রতিবেদন দাখিল সংক্রান্ত শুনানী আগামী ২০শে ডিসেম্বর।